দখলদার ইহুদিবাদী ইসরায়েল অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় পুনরায় ভয়াবহ হামলা শুরু করেছে। বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং যুদ্ধমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজের নির্দেশে দেশটির সেনাবাহিনী গাজা উপত্যকার বিরুদ্ধে পুনরায় গণহত্যা শুরু করেছে। এর মধ্যদিয়ে কার্যত যুদ্ধবিরতির সমাপ্তি ঘোষণা করেছে বর্বর এই বাহিনী।
পার্সটুডের তথ্য মতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবুজ সংকেতে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ইহুদিবাদী বাহিনী গাজায় আবাসিক বাড়ি-ঘর, স্কুল, শরণার্থী শিবির এবং অস্থায়ী তাঁবুগুলোতে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে।
সোমবার রাত থেকে শুরু হওয়া এই হামলায় এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ৪০০ ছাড়িয়ে গেছে এবং আহত হয়েছেন আরও শত শত ফিলিস্তিনি।
প্রাথমিক তথ্য মতে, হতাহতদের বেশিরভাগই শিশু এবং নারী।
ইসরাইলের টিভি চ্যানেল-ফোরটিনের একজন সাংবাদিককে দখলদার বাহিনীর একজন কর্মকর্তা বলেছেন, গত সপ্তাহের শেষের দিকে নতুন করে হামলার গোপন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং গাজায় হামলার বিষয়টি আকস্মিক কোনো বিষয় নয়।
গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরাইল পুনরায় আক্রমণ শুরু করার পর জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্যানন বলেছেন, ‘যুদ্ধে ফিরে আসা জরুরি ছিল, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ প্রতিদিন বৈঠকে বসলেও তাতে তাদের কিছু এসে যায় না।’
গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিক্রিয়ায় ফিলিস্তিনের ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে। এই বিবৃতিতে হামাস হামলার নিন্দা জানিয়েছে এবং এই নৃশংস আগ্রাসনের পরিণতির জন্য নেতানিয়াহু ও তাদের ইহুদিবাদী নাৎসি শাসনব্যবস্থাকে সম্পূর্ণরূপে দায়ী করেছে। দখলদার ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধের লক্ষ্যে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে জরুরি বৈঠকে বসার আহ্বান জানিয়েছে হামাস।
এছাড়া হামলার প্রতিক্রিয়ায় ফিলিস্তিনের ইসলামী জিহাদ আন্দোলন একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে। ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে পুনরায় হামলা চালানোর বিষয়ে নেতানিয়াহুর সিদ্ধান্ত আগের গণহত্যারই ধারাবাহিকতা। এর মধ্যদিয়ে গণহত্যা অব্যাহত রয়েছে।
ফিলিস্তিনের ফ্রিডম মুভমেন্ট এক বিবৃতিতে ঘোষণা করেছে, ‘গাজার উপর নেতানিয়াহু এবং তার রক্তপিপাসু সরকারের নতুন আক্রমণ তাদের নিজেদের সংকট সমাধানে কোনো সহযোগিতা তো করবেই না বরং এর ফলে তাদের দুর্বলতা এবং ব্যর্থতা আরও বাড়বে।’
এদিকে ইহুদিবাদীরা আল-আকসা মসজিদের ওপর সর্বাত্মক অবরোধ জোরদার করার প্রতিক্রিয়ায় ফিলিস্তিনিরা এই পবিত্র স্থানে তাদের উপস্থিতি জোরদার করেছে। তারা এই মসজিদ রক্ষায় ইহুদিবাদী দখলদারদের বিরুদ্ধে শক্তিশালী ঢাল হিসেবে কাজ করছে।
হামাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মাজিদ আবু কুতিশ পবিত্র রমজান মাসের বাকি দিনগুলোতে আল-আকসা মসজিদে ফিলিস্তিনিদের উপস্থিতি অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। যদিও দখলদার ইহুদিবাদীরা এই পবিত্র মসজিদে ইতিকাফ নিষিদ্ধ করে রেখেছে।