ইসরায়েলি হামলায় গাজা এখন মৃত্যুপুরী

দখলদার ইসরায়েলিদের দুনিয়া কাঁপানো বর্বরতায় দেশটির ছিটমহল গাজা উপত্যকা এখন রীতিমতো মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। নারকীয় হত্যাযজ্ঞে অসহায় গাজাবাসীও এখন বেঁচে থাকার আশা ছেড়ে দিয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টার ৪৬টি তাজা প্রাণ বোমার নিষ্প্রাণ ধাতবের আঘাতে নিমিষেই ঝরে গেছে, যার মধ্যে রয়েছেন একজন ফিলিস্তিনি সাংবাদিকও। নিহতদের মধ্যে বেশির ভাগই শিশু ও গর্ভবতী নারী।

আগের রাতে ভয়াবহ বিমান হামলায় গাজা সিটির ২১ ব্যক্তি প্রাণ হারায়। তাদের মধ্যে বাপ-বেটি প্রাণ হারিয়েছে ইসরায়েলি ড্রোন হামলায়। আর দক্ষিণ গাজায় একটি তাঁবুতে বোমার আঘাতে ছয়টি প্রাণ ঝরেছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, গাজার অসম যুদ্ধে এ পর্যন্ত ৫০ হাজার ৬৯৫ ব্যক্তির মৃত্যু ও এক লাখ ১৫ হাজার ৩৩৮ ব্যক্তি আহত হয়েছে।

তবে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, এ পর্যন্ত ৬১ হাজার ৭০০ ব্যক্তি মারা গেছে এবং হাজার হাজার ব্যক্তি নিখোঁজ রয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এসব হতভাগা ভবনের ধ্বংসাবশেষের নিচে চাপা পড়ে প্রাণ হারিয়েছে। এ ছাড়া দুই শতাধিক ফিলিস্তিনিকে বন্দি হিসেবে ইসরায়েলে নেওয়া হয়েছে।অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে দখলদার ইসরায়েল এক মাস ধরে চালিয়ে যাচ্ছে অবর্ণনীয় সহিংসতা এবং অবরোধ।

শনিবার কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, গত এক মাসে গাজায় একটি পণ্যবাহী ট্রাকও প্রবেশ করেনি। মানবিক সংকটের পাশাপাশি স্বাস্থ্যব্যবস্থাও কার্যত ভেঙে পড়েছে। হাসপাতালগুলো উপচে পড়ছে আহতদের ভিড়ে।

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের অবিরাম বোমাবর্ষণ ও হামলার মধ্যে ফিলিস্তিনিরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেষ বার্তা ও বিদায় চিঠি লিখে রাখছে। তাদের আশঙ্কা, এবার তারা বাঁচবে না। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলে হামলা শুরুর পর থেকেই গাজাবাসী একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে, ইসরায়েলের আক্রমণ ও তাদের দৈনন্দিন জীবন যাপনের কথা বিশ্ববাসীকে জানাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে আসছে। কিন্তু গত ২৪ ঘণ্টায় হতাশা ও মৃত্যুভয় নিয়ে লেখা পোস্টের সংখ্যা বেড়েছে।

এদিকে গাজায় চলমান ধ্বংসযজ্ঞ ও প্রাণহানির প্রতিবাদে বৈশ্বিক ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক দুটি সংগঠন নিউইয়র্ক হেলথকেয়ার ওয়ার্কার্স ফর প্যালেস্টাইন এবং ডক্টর্স অ্যাগেইনস্ট জেনোসাইড। আজ সোমবার  নিউইয়র্কে অবস্থিত জাতিসংঘের প্রধান কার্যালয়ের সামনে স্থানীয় কর্মীরা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করবেন। সূত্র : আলজাজিরা, মিডল ইস্ট আই