আগেও একই শহরে কর্মরত ছিলেন দুইজন। দেখা হতো দিনে-রাতে। দীর্ঘ এক বছরের বেশি সময় পর আবারও একই শহরে পুলিশ কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ ও সানজিদা আফরিন নিপা।
হারুন-সানজিদার মধ্যে ছিল পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক। প্রেমঘটিত ঘটনা নিয়ে ঘটে যায় তুলকালামকাণ্ড। দেশজুড়ে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। সাময়িক বরখাস্ত করা হয় হারুনকে। বদলি করে সংযুক্ত করা হয় রংপুর রেঞ্জে। ঠিক একবছর পর এবার সানজিদাকে বদলি করে রংপুরে পাঠানো হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্ন আসছে তাহলে কি এবার সানজিদার সঙ্গে দেখা হবে হারুনের?
জানা গেছে, গতবছরের ৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় চিকিৎসা করাতে রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে যান ডিএমপির এডিসি সাহজিদা। পরে তিনি হাসপাতালে ডেকে নেন ডিএমপির তৎকালীন আরেক এডিসি হারুনকে। অভিযোগ আছে, হাসপাতালে দুইজনকে অপ্রীতিকর অবস্থায় আটক করে সানজিদার স্বামী আজিজুল হক মামুন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ নেতাদের সহায়তায় সানজিদা-হারুনকে আটকে ফেসবুক লাইভ করা হয়।
বিষয়টি নিয়ে সেখানে তুমুল বাক-বিতণ্ড হয়। পরে ওইদিন রাতেই শাহবাগ থানা পুলিশের সহায়তায় ছাত্রলীগের দুইজন নেতাকে থানায় তুলে এনে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে বেদম প্রহার করা হয়। এসময় পুলিশের পায়ে থাকা বুট, অস্ত্রের বাট দিয়ে ছাত্রলীগ নেতা আনোয়ার হোসেন নাঈমের পাঁচটি দাঁত উপরে ফেলা হয়। আরেক নেতা শরীফ আহমেদ মুনিমকে বেদম মারধর করা হয়। বিষয়টি জানাজানি হলে হারুনকে ডিএমপির পিওএম উত্তর বিভাগে বদলি করা হয়। পরে ১২ সেপ্টেম্বর তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে রংপুর রেঞ্জে পাঠানো হয়। গত ১৬ জুলাই পুলিশ অধিদপ্তরের এক প্রজ্ঞাপনে হারুনের বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এদিকে ২৪ অক্টোবর ডিএমপির এডিসি সানজিদা আফরিনকে বদলি করে রংপুর পাঠানো হয়েছে। তাকে রংপুর পিটিসিতে (পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার) বদলি করা হয়েছে। তিনি ওইদিনই ডিএমপিতে শেষ অফিস করেছেন। চলতি সপ্তাহে সানজিদা পিটিসিতে অফিস শুরু করবেন।
অন্যদিকে রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ঢাকা টাইমসকে জানিয়েছেন, হারুন বর্তমানে আমাদের রেঞ্জে সংযুক্ত আছেন। তাকে প্রতিদিন অফিসে আসতে হয়, তবে কোনো চেয়ার-টেবিল তার নামে বরাদ্দ নেই।
সংযুক্তের কারণ সম্পর্কে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘থানায় তুলে নিয়ে ছাত্রলীগ নেতাদের নির্যাতনের ঘটনার তদন্ত শেষ হয়নি। একারণে তাকে রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত রাখা হয়েছে। আপাতত এখানেই তাকে থাকতে হবে।’