আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গণহত্যা, গুম এবং নানা অভিযোগে এরইমধ্যে দেড় শতাধিক মামলা দায়ের হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে। এবার মামলা দায়ের হলো ক্ষমতাচ্যুত দলটির ঘনিষ্ঠ দুই অভিনেত্রী অরুণা বিশ্বাস ও রোকেয়া প্রাচীর নামেও।
সোমবার নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানায় বাদী হয়ে মামলাটি করেন রুহুল আমিন নামে এক যুবক। যিনি গত ২০ জুলাই কাঁচপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালীন পুলিশের গুলিতে পা হারিয়েছেন। সেই অভিযোগেই তিনি একটি মামলা করেছেন, যেটির আসামি তালিকায় অরুণা বিশ্বাস ও রোকেয়া প্রাচীও রয়েছেন।
১৭৯ জনের নাম উল্লেখ করে হওয়া ওই মামলার প্রধান আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। অন্য আসামিরা হলেন- শেখ রেহানা, সজীব ওয়াজেদ জয়, ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, হাছান মাহমুদ, অ্যাড. কামরুল ইসলাম, ডিবির হারুন-অর-রশীদ, সাবেক এমপি নজরুল ইসলাম বাবুসহ সোনারগাঁ ও রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।
মামলার বাদী সোনারগাঁ উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের লাদুরচর গ্রামের রুহুল আমিন (৩৯) এজাহারে উল্লেখ করেন, আসামিরা পরস্পর যোগসাজসে গত ২০ জুলাই সোনারগাঁয়ের কাঁচপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন তাকে গুলি করে আহত করেন। এতে তিনি বর্তমানে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন।
এ ব্যাপারে সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ আব্দুল বারী গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘মামলার বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
প্রসঙ্গত, এ মামলার দুই আসামি অভিনেত্রী অরুণা বিশ্বাস ও রোকেয়া প্রাচী বহুদিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালীন এই দুজনসহ আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠ বেশ কয়েকজন অভিনয়শিল্পী ‘আলো আসবেই’ নামে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নেন।
এই গ্রুপের শিল্পীরা আন্দোলন দমাতে নানা পরামর্শের কথা প্রকাশ করেন তাদের চ্যাটের মাধ্যমে। এর মধ্যে অভিনেত্রী অরুণা বিশ্বাস আন্দোলরত ছাত্র-জনতার ওপর গরম পানি নিক্ষেপের পরামর্শ পর্যন্ত দেন। সেই কথোপকথনের কিছু স্ক্রিন শট সম্প্রতি ফাঁস হলে বড় ধরনের বিতর্কের সৃষ্টি হয়।
যদিও শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারত পালিয়ে যাওয়ার দুদিন বাদে গোপনে দেশত্যাগ করেন অভিনেত্রী অরুণা বিশ্বাসও। তিনি কানাডায় পালিয়ে যান। অন্যদিকে, সোনারগাঁয়ে হওয়া মামলার অপর আসামি রোকেয়া প্রাচী বর্তমানে দেশেই রয়েছেন বলে জানা গেছে।