বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র সালমান শাহ, যিনি অল্প সময়ের ক্যারিয়ারে লাখো দর্শকের হৃদয়ে স্থায়ী আসন করে নিয়েছিলেন। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর তিনি অকালে মৃত্যুবরণ করেন। মাত্র ২৫ বছর বয়সে ইস্কাটনের নিজ বাসায় ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় তার মরদেহ পাওয়া যায়, যা দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি করে। সালমানের অকাল প্রয়াণ এখনও তার ভক্তদের বেদনায় ডুবিয়ে রাখে।
তার মৃত্যুর ২৮ বছর পেরিয়ে গেলেও, আজও এই মৃত্যু রহস্যাবৃত। ২০২০ সালে পিবিআই (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) দাবি করে যে সালমান আত্মহত্যা করেছিলেন। তারা জানায়, স্ত্রী সামিরার সঙ্গে দাম্পত্য কলহ এবং শাবনূরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের জেরে তিনি আত্মহত্যা করেন। তবে সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরী এই সিদ্ধান্তকে কখনোই মেনে নেননি। তিনি বরাবরই দাবি করেছেন যে, তার ছেলে পরিকল্পিত হত্যার শিকার হয়েছেন।
সম্প্রতি লন্ডন থেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নীলা চৌধুরী আবারও বলেন, সালমান আত্মহত্যা করেননি, তাকে হত্যা করা হয়েছে। তার দাবি, সালমানকে হত্যার জন্য ভারত থেকে ভাড়া করা খুনিদের ব্যবহার করা হয়েছিল এবং আজিজ মোহাম্মদ ভাইসহ প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। তিনি আরও বলেন, তাকেও হুমকি দেওয়া হয়েছে এবং তাকে গুম করার পরিকল্পনা করা হয়েছিল।
সালমান শাহের মা আরও অভিযোগ করেন, মামলার আসামি হিসেবে সালমানের স্ত্রী সামিরাকে কখনোই যথাযথভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি এবং আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়নি। তিনি মামলাটি পুনরুজ্জীবিত করে সালমানের হত্যার ন্যায়বিচার দাবি করেছেন।
উল্লেখ্য, সালমান শাহ ১৯৭০ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন। তার প্রকৃত নাম ছিল শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন। ক্যারিয়ারের শুরুতে ছোট পর্দায় কাজ করলেও, চলচ্চিত্রে অভিনয় করে দ্রুতই তিনি জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছান। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমার মধ্যে রয়েছে ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’, ‘অন্তরে অন্তরে’, ‘বুকের ভেতর আগুন’, ‘তোমাকে চাই’, এবং ‘সত্যের মৃত্যু নেই’।