দীর্ঘ বিতর্কের পর আইএএস পদ হারালেন পূজা

দীর্ঘ বিতর্কের পর অবশেষে বহিষ্কৃই হলেন ভারতের বিতর্কিত আইএএস পূজা খেড়কর। শনিবার তাকে প্রশাসনিক পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। ‘অল ইন্ডিয়া সার্ভিস অ্যাক্ট, ১৯৫৪’ এবং সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা ২০২২ ধারার শিক্ষানবিশ আইন প্রয়োগ করে পূজার নিয়োগ বাতিল করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।

ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশনের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার অনলাইন জানিয়েছে, পরিচয় জাল করে আমলা হওয়ার প্রবেশিকা পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন পূজা। নাম, বাবা-মায়ের নাম, ছবি, স্বাক্ষর, প্রতিবন্ধী শংসাপত্র— সবই বারবার বদলে পরীক্ষায় বসেছেন তিনি।

এই অভিযোগের ভিত্তিতে গত ৩১ জুলাই পূজার নিয়োগ বাতিল করে ইউপিএসসি। একই সঙ্গে তারা জানিয়েছিল, ভবিষ্যতে আর কখনও এই ধরনের সরকারি পরীক্ষায় তিনি বসতে পারবেন না। এর পাশাপাশি পূজার বিরুদ্ধে প্রতারণা এবং জালিয়াতির ফৌজদারি মামলাও করেছিল ইউপিএসসি। সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দিল্লি হাইকোর্টেও গিয়েছিলেন পূজা।

তার যুক্তি ছিল, একবার আমলা হিসাবে নিযুক্ত হলে আর ইউপিএসসির কিছু করার থাকে না। ফলে পূজাকে বরখাস্ত করার ক্ষমতাও তাদের হাতের বাইরে। নিয়োগকৃত আমলাদের বরখাস্ত করার ক্ষমতা রয়েছে একমাত্র কর্মী এবং প্রশিক্ষণ দফতরের। এর পরেই পূজার নিয়োগ বাতিল করেছে কেন্দ্র।

মাসদুয়েক আগে মহারাষ্ট্রের পুণের অতিরিক্ত জেলাশাসক হিসাবে নিযুক্ত পূজার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজের ব্যক্তিগত ব্যবহারের গাড়িতে মহারাষ্ট্র সরকারের স্টিকার, লালবাতি ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া অতিরিক্ত জেলাশাসকের কক্ষ ‘দখল’ করা এবং জেলাশাসকের সহকারীর কাছে বেআইনি দাবিদাওয়া পেশ করে সেই দাবি পূরণের জন্য হুমকি দেওয়ার অভিযোগও ওঠে তার বিরুদ্ধে। সেখান থেকে বিতর্কের সূত্রপাত। তার পর পূজার একের পর এক ‘কীর্তি’ প্রকাশ্যে আসতে শুরু করে।

জানা যায়, ইউপিএসসি পরীক্ষায় সংরক্ষণের সুবিধা পেতে ভুয়া প্রতিবন্ধীর আবেদন করেছিলেন তিনি। দুবার ইউপিএসসি পরীক্ষায় সেই ভুয়া মেডিক্যাল সার্টিফিকেট জমাও দেন তিনি। একবার দৃষ্টিশক্তির সমস্যার কথা উল্লেখ করে, আর দ্বিতীয়বার মানসিক অসুস্থতার কথা উল্লেখ করে।

তবে নিয়োগের আগে ২০২২ সালে প্রতিবন্ধকতার কারণে পরীক্ষার বন্দোবস্ত করা হলেও ছয়বার নানা অজুহাতে পূজা তা এড়িয়ে গিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। এত মিথ্যার মধ্যেও তিনি কীভাবে চাকরি পেলেন, তা নিয়েই উঠেছিল প্রশ্ন।