ভারতের রাজধানী দিল্লির লালকেল্লায় রামলীলা। আর সেই রামলীলায় নাচে অংশ নিয়ে তাক লাগালেন বাংলাদেশের এক তরুণী। বাংলাদেশের ঢাকার মগবাজারের বাসিন্দা ওই তরুণীর নাম তাসমিয়া হোসেন। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন। রামলীলায় মা কালীর ভূমিকায় তার নৃত্যে অভিভূত পরিচালক থেকে ইভেন্ট ম্যানেজার। স্কুলজীবনের শেষে ঢাকা থেকে দিল্লিতে উচ্চশিক্ষার জন্য চলে আসেন তাসমিয়া। পড়াশোনার পাশাপাশি চলতে থাকে কত্থকের তালিম। রামলীলায় অভিনয় নিয়ে বাংলাদেশের ওই তরুণী বলেন, ১১ দিনের কাজ ছিল। অনেক আনন্দ করেছি। সকালে রিহার্সালের জন্য আসতে হত। দুপুরে স্টেজে ফাইনাল টেক হত। তারপর শো হত। অসাধারণ অভিজ্ঞতা। অন্য ধর্মীয় সংস্কৃতিতে বেড়ে ওঠা তাসমিয়ার রামলীলায় অভিনয় করতে সমস্যা হয়নি, এমন প্রশ্ন শুনে তিনি বলেন, আমি ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাস করি। চার্চে যাই। মন্দিরে যাই। মসজিদে যাই। নতুন কিছু শিখতে পারব। এ জন্য খুবই উত্তেজিত ছিলাম। নাচের কোনও বিশেষ অংশের জন্য পুরাণের অনেক কাহিনিও জেনেছি। দিল্লিতে রামলীলায় অনবদ্য উপস্থাপনা ঢাকার তাসমিয়ার কখনও মা কালী কখনও অন্য রূপে স্টেজ কাঁপিয়েছেন তাসমিয়া। তিনি বলেন, আমাকে যখন প্রথম মা কালীর ভূমিকায় নাচের কথা বলা হয়, তখন ভাবছিলাম পারব তো। কারণ, মা কালীর রূপ ধারণের জন্য মুখে ক্রোধের প্রতিচ্ছবি তুলে ধরতে হয়। কিন্তু, পারফর্ম করার পর সবাই যেভাবে প্রশংসা করলো, তাতে আমি অভিভূত। রামলীলার পরিচালক অনিশেষ শর্মা বলেন, জনশ্রুতি আছে যে তুলসীদাসের অনুপ্রেরণায় বাদশা আকবর রামলীলা শুরু করেছিলেন। তিনি তুলসীদাসের দোহা শুনতে ভালবাসতেন। তিনি শিল্পটাকে ভালবেসেছিলেন। সেখানে ধর্মীয় বাধার দেওয়াল তুলতে দেননি। তাসমিয়ায় মুগ্ধ ইভেন্ট ম্যানেজার অনুষ্কা পণ্ডিত। তিনি বলেন, যারা অন্যরকম পরিবেশ থেকে আসে, তাদের মধ্যে আমি একটু নিরাপত্তাবোধের অভাব দেখি। সেটা কিন্তু তাসমিয়ার মধ্যে আমি একদম দেখিনি। নাচের সময় সে ছিল সাবলীল। যা একজন শিল্পীর অন্তর থেকে অনুভব করা খুব জরুরি। তাসমিয়া বুঝতেই দেয়নি যে একটা সম্পূর্ণ আলাদা সংস্কৃতি থেকে এসেছে। সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন