শবেকদরে কী করব

শবেকদর শব্দটি সরাসরি কোরআন ও হাদিসে নেই। এটি ফারসি শব্দ। এ বিষয়ে কোরআন ও হাদিসে এসেছে লাইলাতুল কদর শব্দটি। ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আমি কোরআন নাজিল করেছি লাইলাতুল কদরে। তুমি কি জানো, লাইলাতুল কদর কী? লাইলাতুল কদর হাজার মাসের চেয়েও উত্তম।’ (সুরা : কদর, আয়াত : ১-৩)

লাইলাতুল কদর শ্রেষ্ঠতম রজনী। এ রাতের ইবাদতের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। হাদিস শরিফে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় শবেকদরে ইবাদত করবে, তার আগের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।’ (মুসলিম, হাদিস : ৭৬০; বুখারি, হাদিস : ২০১৪)

যারা এ রাতের রহমত ও বরকত থেকে বঞ্চিত তারা সবচেয়ে হতভাগা। নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা এমন একটি মাস পেয়েছ, যার মধ্যে এমন একটি রজনী রয়েছে, যা হাজার মাসের চেয়ে উত্তম। যে ব্যক্তি এই পুণ্যময় রাতে বঞ্চিত থাকে, সে সমূহ কল্যাণ থেকেই বঞ্চিত থাকে। সে খুবই হতভাগা, যে এর কল্যাণ থেকে বঞ্চিত থাকে।

সুতরাং এই রাতের ফজিলত লাভে সচেষ্ট হওয়া আমাদের সবার কর্তব্য। অন্তত এশা ও ফজরের নামাজ যদি জামাতের সঙ্গে আদায় করা যায়, তবু সারা রাত নামাজ পড়ার সমান সওয়াব পাওয়া যাবে। এক হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি এশা ও ফজর জামাতের সঙ্গে পড়ল সে যেন সারা রাত দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ল।’ (মুসলিম, হাদিস : ৬৫৬)

শবেকদরে কী আমল করব

এক. এ রাতে যথাযথ নিয়মে তাওবা করতে হবে।

দুই. দুই ব্যক্তি বা পরিবারের মধ্যকার ঝগড়াবিবাদ মিটিয়ে দেওয়া শবেকদরের অন্যতম ইবাদত। রাসুল (সা.) বলেন, ‘আমি তোমাদের শবেকদর সম্পর্কে অবগত করানোর জন্য বের হয়ে এসেছিলাম। কিন্তু অমুক অমুক ব্যক্তির ঝগড়ার কারণে আমাকে তা ভুলিয়া দেওয়া হয়েছে।’ (বুখারি)

তিন. হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, ‘আমি রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করেছিলাম, হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! যদি আমি শবেকদর পেয়ে যাই, তবে আল্লাহর কাছে কী দোয়া করব? রাসুল (সা.) বললেন, এ দোয়া পড়বে—আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুয়্যুন তুহিব্বুল আফওয়া ফা’ফু আন্নি।’ অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমাকারী এবং আপনি ক্ষমাকে পছন্দ করেন। সুতরাং আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন।

চার. শবেকদরে যেহেতু কোরআন নাজিল হয়েছে। তাই এ রাতের অন্যতম ইবাদত হলো কোরআন তিলাওয়াত।

পাঁচ. শবেকদর হলো ভাগ্য রজনী। এ রাতে বান্দার ওই বছরের রিজিক নির্ধারণ করা হয়। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘আমি তো তা অবতীর্ণ করেছি এক বরকতময় রজনীতে। আমি তো সতর্ককারী। এই রজনীতে প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয় স্থির করা হয়।’ (সুরা : দুখান, আয়াত : ৩-৪)

মহান আল্লাহ আমাদের যথাযথভাবে শবেকদর উদ্‌যাপন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।