যেসব পাপের ব্যাপারে কোনো শাস্তি, আল্লাহর ক্রোধ বা অভিশাপের কথা বলা হয়নি; বরং শুধু নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, সেগুলো হলো সগিরা গুনাহ। বিভিন্ন কারণে সগিরা গুনাহ কবিরা গুনাহে রূপান্তরিত হয়। নিম্নে কিছু কারণ উল্লেখ করা হলো—
গুনাহের পুনরাবৃত্তি করা : যে ব্যক্তি বারবার সগিরা গুনাহে লিপ্ত হয়, তার ভয় করা উচিত যে এটা কবিরা গুনাহে রূপান্তরিত হতে পারে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘দুর্ভোগ বারবার গুনাহকারীর জন্য, যারা জ্ঞাতসারে বারবার অন্যায় কাজ করতে থাকে।’ (আল-আদাবুল মুফরাদ, হাদিস : ৩৮০; সহিহুল জামে, হাদিস : ৮৯৭)
ইবনু আব্বাস (রা.) বলেন, ‘ক্ষমা প্রার্থনায় কবিরা গুনাহ থাকে না। আর সগিরা গুনাহ বারবার করলে তা সগিরা থাকে না।’ (শরহু উসুলে ইতিকাদে আহলিস সুন্নাহ ওয়াল জামাআত, ৬/১১১০)
গুনাহ করার পর তা প্রকাশ করা : কোনো কোনো পাপী ব্যক্তি পাপাচার করার পর তা প্রকাশ করে। এটা এ কারণে যে তার অন্তরে আল্লাহর মহত্ত্ব, বড়ত্ব ও সম্মান কম থাকে।এটা কোনো মুমিনের বৈশিষ্ট্য হতে পারে না। কেননা মহান আল্লাহ গুনাহ প্রকাশ করা অপছন্দ করেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আমার সব উম্মতকে মাফ করা হবে, তবে প্রকাশকারী এর ব্যতিক্রম। আর নিশ্চয়ই এটা বড়ই অন্যায় যে কোনো ব্যক্তি রাতের বেলা অপরাধ করল, যা আল্লাহ গোপন রেখেছেন।কিন্তু সে সকালে বলে বেড়াতে লাগল, হে অমুক, আমি আজ রাতে এই এই কাজ করেছি। অথচ সে এমন অবস্থায় রাত কাটাল যে আল্লাহ তার কর্ম লুকিয়ে রেখেছিলেন, আর সে ভোরে উঠে তার ওপর আল্লাহর দেওয়া আবরণ খুলে ফেলল।’ (বুখারি, হাদিস : ৬০৬৯)
গুনাহকে ছোট মনে করা : গুনাহের পর্যায় বা স্তর যাই হোক না কেন, বান্দার উচিত লক্ষ করা যে সব ধরনের গুনাহই আল্লাহর অবাধ্যতা। আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রা.) বলেন, ‘ঈমানদার ব্যক্তি তার গুনাহগুলোকে এত বিরাট মনে করে যে যেন সে একটি পর্বতের নিচে উপবিষ্ট আছে, আর সে আশঙ্কা করছে যে সম্ভবত পর্বতটা তার ওপর ধসে পড়বে। আর পাপিষ্ঠ ব্যক্তি তার গুনাহগুলোকে মাছির মতো মনে করে, যা তার নাকের ওপর দিয়ে চলে যায়।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৩০৮)