কবর আজাব থেকে মুক্তির দোয়া

কবর পরকালের প্রথম ঘাঁটি। যদি কেউ এই ঘাঁটি থেকে থেকে মুক্তি পেয়ে যায়, তাহলে পরবর্তী ঘাঁটিগুলো তার জন্য সহজ হবে। আর যদি কেউ কবর থেকে মুক্তি না পায়, তাহলে পরবর্তী ঘাঁটিগুলো তার জন্য আরো কঠিন হবে।’ (তিরমিজি: ২৩০৮)

কবর আজাব সত্য। মহানবী (স.) প্রায়ই কবরের আজাব থেকে মুক্তির দোয়া করতেন। সাহাবিরাও গুরুত্বের সঙ্গে কবর আজাব থেকে মুক্তির দোয়া মুখস্থ করে রাখতেন। এমনকি বাচ্চাদেরও শেখাতেন।

কবর আজাব থেকে মুক্তির জন্য নবীজির (স.) কয়েকটি দোয়ার মধ্যে একটি হলো- اللَّهُمَّ إِنِّيْ أَعُوْذُ بِكَ مِنْ الْجُبْنِ وَأَعُوْذُ بِكَ أَنْ أُرَدَّ إِلَى أَرْذَلِ الْعُمُرِ وَأَعُوْذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الدُّنْيَا وَأَعُوْذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল জুবনি ওয়া আউজুবিকা আন উরাদ্দা ইলা আরজালিল উমরি ওয়া আউজুবিকা মিন ফিতনাতিদ দুনইয়া ওয়া আউজুবিকা মিন আজাবিল কাবরি।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমি ভীরুতা, অতি বার্ধক্য, দুনিয়ার ফিতনা ও কবরের শাস্তি থেকে আপনার নিকট পানাহ চাই।’ (সহিহ বুখারি: ২৮২২)

আমর ইবনু মায়মূন আউদি (রহ.) থেকে বর্ণিত আছে যে, শিক্ষক যেমন ছাত্রদের লেখা শিক্ষা দেন, হজরত সাদ (রা.) তেমনিভাবে তাঁর সন্তানদের উল্লেখিত দোয়াটি শিক্ষা দিতেন এবং বলতেন, আল্লাহর রাসুল (স.) সালাতের পর এগুলো থেকে পানাহ চাইতেন। (সহিহ বুখারি: ২৮২২)কবর আজাব থেকে মুক্তির আরেকটি দোয়া হলো-  اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ جَهَنَّمَ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَسِيحِ الدَّجَّالِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَالْمَمَاتِ উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন আজাবি জাহান্নামা, ওয়া আউজুবিকা মিন আজাবিল কাবরি, ওয়া আউজুবিকা মিন ফিতনাতিল মাসিহিদ দাজ্জালি, ওয়া আউজুবিকা মিন ফিতনাতিল মাহইয়া ওয়াল মামাত।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে জাহান্নামের আজাব থেকে আশ্রয় চাই, কবরের আজাব থেকে আশ্রয় চাই, আশ্রয় চাই মাসিহ দাজ্জালের ফিতনা থেকে এবং আশ্রয় চাই জীবন-মরণের বিপদাপদ থেকে।’ আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রাসুল (স.) এই দোয়াটি এমনভাবে শেখাতেন, যেভাবে তাদের কোরআনের সুরা শেখাতেন। (আবু দাউদ: ১৫৪২)কবরের আজাব থেকে মুক্তির আমল
তাওহিদ-বিশ্বাস, তাকওয়ায় অটলতা, আল্লাহর রাস্তায় গমন ও শাহাদাত বরণ, ইসলামি রাষ্ট্রের পাহারা দেওয়া, নিয়মিত সুরা মুলক পাঠ এবং সময়োপযোগী আমল-ইবাদত ইত্যাদি কবর আজাব থেকে রক্ষা করে। (ড. খালিদ রাতিব, আল-আসবাব আল-মুনজিয়া মিন আজাবিল কবর; শাবকাতুল আলুকাহ: ০৪-১১-২০১৮)উল্লেখ্য, কবর আজাবের কারণসমূহের মধ্যে গিবত-পরনিন্দা, প্রস্রাব থেকে পরিচ্ছন্ন না হওয়া, অন্যের দোষ খোঁজা, সম্পদ হরণ, ধোঁকাবাজি, প্রতারণা ও প্রাপ্য থেকে অন্যকে বঞ্চিত করা, কোরআন-হাদিস অস্বীকার করা, কোরআন তেলাওয়াত বা অধ্যয়ন না করা, ফরজ নামাজ না পড়ে ইচ্ছাকৃত ঘুমানো, মিথ্যা বলা, সুদ খাওয়া ও জেনা-ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়া অন্যতম। (ড. আবদুল্লাহ ইবনে হামুদ আল-ফারিহ; মিন আসবাবি আজাবিল কাবরি মাআদ দলিল, শাবকাতুল আলুকাহ: ০৪-১১-২০১৮)