ইসলামে হুন্ডি জায়েজ হলেও দেশের আইনে নিষিদ্ধ

প্রচলিত ব্যাংকিং পদ্ধতির বাইরে অর্থ লেনদেনের একটি উপায়ের নাম ‘হুন্ডি’ বা ‘হাওয়ালা’। পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে বহুকাল ধরেই হুন্ডিতে টাকা পাঠানোর প্রচলন আছে। এ ব্যবস্থায় বিদেশে অবস্থানকারী কোনো ব্যক্তি হুন্ডি ব্যবসায়ীর কাছে ওই দেশীয় মুদ্রায় কিছু অর্থ দিয়ে দেশে কোথায় কার কাছে পাঠাতে হবে তা বুঝিয়ে দেন। ওই ব্যবসায়ী তার দেশীয় এজেন্টের মাধ্যমে সমপরিমাণ টাকা নির্দিষ্ট ব্যক্তির কাছে পৌঁছে দেন।

ইসলামে হুন্ডি ব্যবসা এবং হুন্ডির মাধ্যমে লেনদেন করা জায়েজ। তবে আমাদের দেশের আইনে হুন্ডি ব্যবসা ও হুন্ডিতে টাকা লেনদেন নিষিদ্ধ। শরিয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে রাষ্ট্রীয় কোনো আইন শরিয়তের বিধি-বিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক না হলে তা মেনে চলা আবশ্যক। তাই শরিয়তে জায়েজ হলেও দেশের আইনে নিষিদ্ধ হওয়ায় হুন্ডিতে টাকা লেনদেন থেকে বিরত থাকা উচিত।

এটিকে এক দেশের মুদ্রার বিনিময়ে অন্য দেশের মুদ্রার বেচাকেনা বলা যায়। এক দেশীয় মুদ্রা অন্য দেশীয় মুদ্রা বা কোন বস্তুর বিনিময়ে ক্রয় বিক্রয় করা জায়েজ। শর্ত হলো এ রকম বেচাকেনার ক্ষেত্রে অন্তত একটি পক্ষের পণ্য নগদ হতে হবে। অন্য পক্ষেরটি বাকি হলেও লেনদেন জায়েজ হবে।

উভয়পক্ষ থেকেই বাকিতে বিভিন্ন দেশের মুদ্রা কেনাবেচা জায়েজ নয়। অন্তত একপক্ষ থেকে নগদ হওয়া আবশ্যক। ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বাকি পণ্যের বিনিময়ে বাকি পণ্য বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন। (মুসতাদরাকে হাকেম)

হুন্ডিতে টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে যিনি টাকা পাঠাচ্ছেন, তিনি যদি লেনদেন চুক্তির সময়ই তার পক্ষের পণ্য অর্থাৎ ওই দেশীয় মুদ্রা হুন্ডি ব্যবসায়ীর কাছে হস্তান্তর করেন, তাহলে তা জায়েজ হবে। তবে যেহেতু রাষ্ট্রীয় আইন হুন্ডি ব্যবসাকে নিষিদ্ধ করেছে; সেহেতু হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ লেনদেন না করাই উত্তম।