মন্দিরে মন্দিরে বিসর্জনের বিষাদ, সিঁদুর খেলার আনন্দ

অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে শুভ ও কল্যাণ এবং সব মানুষের মধ্যে শান্তি ও সম্প্রীতির আকাঙ্খা নিয়ে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে আজ শেষ হচ্ছে শারদীয় দুর্গোৎসব।

তাইদুর্গাপূজার মণ্ডপগুলোতে একদিকে বিসর্জনের বিষাদ, অন্যদিকে সিঁদুর খেলার আনন্দ। ফলে আনন্দ-বিষাদে ভরে আছে ভক্তদের অন্তর। আবারও দেবী দুর্গার মর্ত্যলোকের আগমনে অপেক্ষা এক বছরের। চোখের কোণে জল নিয়েও উৎসবমুখর পরিবেশে ত্রিনয়নীকে বিদায় দেবেন ভক্তরা। চাইবেন অশুভ শক্তি বিনাশের আশীর্বাদ।

রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় গিয়ে দেখা গেল, লাল-সাদা শাড়ি পড়ে শত শত গৃহিণী বরণডালা ও সিঁদুরের কৌটা নিয়ে হাজির। তারা দেবীর চরণ স্পর্শ করে সঙ্গী বা উপস্থিত অন্য ভক্তদের কপালে-কপোলে সিঁদুর মাখিয়ে দিচ্ছেন।

রাজধানীর শেখ সাহেব বাজার থেকে বরণডালা নিয়ে অন্যতম প্রাচীন এই মন্দিরে এসেছিলেন পুনম সাহা। তার স্বামী কুমারেশ বিশ্বাস সরকারি চাকরি করেন। প্রতি বছর পূজায় বাড়ি গেলেও এবার বাড়ি যাওয়া হয়নি।

পুনম সাহা জানান, বিসর্জনের পর এই সিঁদুরখেলা মূলত বিবাহিত নারীদের একটি মাঙ্গলিক আচার। স্বামী-সংসারের মঙ্গল কামনা করে সবাই বরণডালা সাজিয়ে বা সিঁদুরের কৌটা সঙ্গে নিয়ে আসেন। এই সিঁদুর দেবীর চরণ স্পর্শ করিয়ে কৌটায় করে সংরক্ষণ করেন। এই সিঁদুরই তারা সারা বছর ব্যবহার করেন।

আজ প্রতিমা বিসর্জনের আগে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির থেকে বিকেল ৪টায় শোভাযাত্রা বের হবে। বিসর্জন শোভাযাত্রার সম্ভাব্য রুট হল ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির হতে বের হয়ে পলাশী মোড়–জগন্নাথ হল-কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার – দোয়েল চত্বর–হাইকোর্ট বটতলা–সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল–পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স–নগর ভবন–গোলাপশাহ মাজার–বঙ্গবন্ধু স্কয়ার–গুলিস্তান–নবাবপুর লেভেল ক্রসিং–নবাবপুর রোড–মানসি হল ক্রসিং–রথখোলার মোড়–রায়সাহেব বাজার মোড় – শাঁখারিবাজার–জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়–সদরঘাট বাটা ক্রসিং–পাটুয়াটুলি মোড়/সদরঘাট টার্মিনাল মোড় হয়ে ওয়াইজঘাট গিয়ে শেষ হবে।

গতকাল শনিবার ছিল মহানবমী। নবমী তিথিতে বিহিত পূজা এবং দর্পণ বিসর্জনের মাধ্যমে মণ্ডপে মণ্ডপে দেবী দুর্গার আরাধনা করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এদিন সকাল ৬টা থেকে হয় নবমী বিহিত পূজা। ১০৮টি বেলপাতা, আমকাঠ, ঘি দিয়ে যজ্ঞের মাধ্যমে দেবী দুর্গার কাছে দেওয়া হয় আহুতি। এদিকে বিসর্জনের ক্ষণ এগিয়ে আসায় সবার মধ্যে ছিল বিদায়ের সুর। এবার তিথির কারণে মহানবমী পূজার পরই দশমীর বিহিত পূজা এবং দর্পণ বিসর্জন অনুষ্ঠিত হয়েছে।