ভোর থেকে রাজধানীতে টানা ঝুম বৃষ্টি, ডুবেছে বহু সড়ক

‘বছরের সেরা বৃষ্টি হচ্ছে আজ’- মগবাজার মোড়ে দোকানের ঝাপড়ির নিচে দাঁড়িয়ে এমনটাই বলাবলি করছিলেন কয়েকজন পথচারী। সড়কের অবস্থাও বলছে তাই। শুক্রবার ভোর থেকে শুরু হওয়া টানা ঝুম বৃষ্টিতে পানির নিচে তলিয়ে গেছে রাজধানীর বহু সড়ক। বাস-প্রাইভেটকার গেলে নদীর ঢেউয়ের মতো পানি এসে আচড়ে পড়ছে ফুটপাথে।

এদিকে, শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় রাস্তায় মানুষ চলাচল একেবারেই কম। যানবাহনও সীমিত। তবুও কাজের তাগিদে ছুটতে হচ্ছে অনেককেই। কিন্তু ছাতা নিয়ে বেরিয়েও বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচানো যাচ্ছে না পরনের পোশাক। কদর বেড়েছে রিকশা-সিএনজি চালকদের। বৃষ্টি উপলক্ষে যাত্রীদের কাছ থেকে তারা পাচ্ছেন আলাদা কদর। সুযোগ বুঝে ভাড়াও চাচ্ছেন দ্বিগুণ।

শুক্রবার সকালে মগবাজার ওয়্যারলেস থেকে ইস্কাটনে কর্মস্থলে আসার পথে এমন সব চিত্রই দেখা গেছে। ওয়্যারলেসে সড়কের অনেকটাই ডুবে গেছে অন্তত দেড় ফুট পানির নিচে। ইস্কাটনে অবস্থিত মহিলা ও শিশু বিষয়ক অধিদপ্তরের সামনের সড়কটিরও একই হাল। পানি উঠে গেছে ফুটপাথেও। ফলে ক্রেতাশূন্য ফুটপাথে অবস্থিত ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকানগুলো।

টানা প্রায় চার ঘণ্টা ধরে চলমান ঝুম বৃষ্টি এখনো অব্যাহত। মাঝেমধ্যে শোনা যাচ্ছে মেঘের চিৎকার। সঙ্গে হালকা বাতাস। শুক্রবার ভোর থেকে শুরু হওয়া এই বৃষ্টি এদিকে স্বস্তির। কারণ তাপমাত্রা কিছুটা কমেছে। অন্যদিকে আবার অস্বস্তির। কারণ, সব শ্রেণির কর্মজীবী মানুষেরা পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, সারা দেশে আজ বৃষ্টি আরও বাড়তে পারে। মেঘলা থাকতে পারে সারা দেশের আকাশ। এতে রোদের দেখা কম পাওয়া যেতে পারে। ফলে সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা কমে আসতে পারে। তবে শনিবার থেকে বৃষ্টি আবার কমে আসতে পারে।

বৃষ্টির এমন পূর্বাভাস বৃহস্পতিবার থেকেই ছিল। আবহাওয়া অধিদপ্তর এদিন জানায়, মৌসুমি বায়ু আবারও শক্তিশালী হয়ে ওঠায় বৃষ্টি বেড়েছে। বঙ্গোপসাগর থেকে প্রচুর মেঘ দেশের উপকূল দিয়ে প্রবেশ করছে। বিশেষ করে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার উপকূল দিয়ে মেঘ বেশি আসছে।

সিলেটসহ দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের পাহাড়ি এলাকায় বাধা পেয়ে বৃষ্টি বাড়িয়ে দিয়েছে। সিলেট, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকাগুলোতে পাহাড়ধসের সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। পাহাড়ের নিচে ও আশপাশে বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।