মাঠে নামলেই নতুন নতুন সব রেকর্ড আর কীর্তি গড়াটাকে একপ্রকার ডালভাত বানিয়ে ফেলেছেন লিওনেল মেসি। বিশ্বকাপের পর প্রথম প্রীতি ম্যাচে পানামার বিপক্ষে ছুঁয়েছিলেন ক্লাব ও আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার মিলিয়ে ৮০০ গোলের মাইলফলক। সেটিও আবার দুর্দান্ত এক ফ্রি-কিকে। দ্বিতীয় ম্যাচে মেসি আরও দুর্দান্ত। অখ্যাত হলেও দারুণ পারফর্ম করতে থাকা কুরাসাওয়ের বিপক্ষে ম্যাচে মাত্র ২০ মিনিটেই মেসি করেছেন আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের ১০০তম গোল। শুধু তাই নয়, প্রথমার্ধেই সম্পন্ন হয়েছে মেসির মাইলফলক ছোঁয়া হ্যাটট্রিক। আর আর্জেন্টিনার ৫ গোল। বুধবার (২৯ মার্চ) ভোরে কুরাসাওয়ের বিপক্ষে দেশের মাটিতে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে নামে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা। ম্যাচের শুরু থেকেই তারা মুহুর্মুহু আক্রমণে প্রতিপক্ষকে নাস্তানাবুদ করে রাখেন। যদিও ফল সঙ্গেই সঙ্গেই আসেনি। ম্যাচের ২০ মিনিটে মিডফিল্ডার লো সেলসোর বাড়ানো বলে প্রথম লিড এনে দেন মেসি। তবে অভ্যস্ত পায়ে নয়, ডান পায়ে তিনি লক্ষ্যভেদ করেন। পরে সেখানে দাঁড়িয়েই উদযাপনও করেন তিনি। এর আগের ম্যাচে পানামার বিপক্ষে মেসি নিজের ৯৯তম গোল করেছিলেন। আর্জেন্টিনার সর্বোচ্চ এই গোলদাতা এই ম্যাচেই নিজের শততম গোলের মাইলফলক স্পর্শ করলেন। হ্যাটট্রিক পূর্ণ করার পর আর্জেন্টিনার জার্সিতে ১৭৪ ম্যাচে তার সর্বমোট গোলের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০২-এ। প্রথম গোলের মিনিট তিনেক পরই ব্যবধান দ্বিগুণ করে লিওনেল স্কালোনির শিষ্যরা। হেড দিয়ে নিকো গঞ্জালেস এবার স্কোরশিটে নাম তোলেন। ৩৩তম মিনিটে গঞ্জালেস বলের যোগান দেন মেসিকে। তবে তার সঙ্গে এনজো ফার্নান্দেজের দারুণ বোঝাপড়ায় সহজ সুযোগ তৈরি হয়। আর সেটিকে নিজের দ্বিতীয় ও দলের তৃতীয় গোলে রূপান্তর করেন মেসি। এরপর মেসির হ্যাটট্রিক পূর্ণ তবে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি। চার মিনিট বাদেই আবারও সেলসোর থ্রু বল। দুই ছোঁয়ায় বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বক্সে ঢুকে জোরালো নিচু শটে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন সাতবারের ব্যালন ডি’রজয়ী ফুটবলার। এটি আর্জেন্টিনার হয়ে মেসির ৯ম হ্যাটট্রিক, সব মিলিয়ে ৫০তম! তবে মেসির গোলের আগে আরও একটি গোল পায় স্কালোনির দল। মেসির অ্যাসিস্টে এবার গোল করেন ফার্নান্দেজ। মেসির গোলের পরই আর্জেন্টিনার গোললাইন দাঁড়ায় ৫-০ তে। যার মাধ্যমে অনেক আগেই তাদের জয় নিশ্চিত হয়ে যায়। একইসঙ্গে ম্যাচের ব্যবধান আরও বাড়ারই ইঙ্গিত দেয় আর্জেন্টিনা। এদিকে, প্রতিপক্ষের প্রবল চাপ সামলে পাল্টা আক্রমণে ওঠার সুযোগই পাচ্ছিল না কুরাসাও। তিনবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের আটকে রাখতে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ের ৮৬ নম্বর দলটি কোনো উপায়ই যেন খুঁজে পাচ্ছিল না। দ্বিতীয়ার্ধে মেসিরা কিছুটা গতি কমালেও জাল ছোঁয়ার প্রতিযোগিতা থামিয়ে রাখেননি। ৫৪তম মিনিটে মার্টিনেজ এবং পরের মিনিটে ভালো সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি গঞ্জালেস। অবশ্য মার্টিনেজের জন্য এটি তেমন কিছু নয়। বিশ্বকাপেও তার গোল মিসের মহড়ায়ও যেন দর্শকরা অভ্যস্ত হয়ে পড়ে! এই ম্যাচের তিন মিনিটে মেসির বাড়ানো বল থেকে প্রথম সুযোগটিও তিনি মিস করেছেন। ৭১তম মিনিটে মেসির থ্রু বল বক্সে পেয়ে গোলরক্ষক বরাবর শট নেন গঞ্জালেস। তবে এবারও তিনি গোল পেতে ব্যর্থ হন। ম্যাচে দুর্দান্ত খেলতে থাকা সেলসোর বদলি হয়ে নামেন ডি মারিয়া। ৭৮তম মিনিটে তার সফল স্পট কিকে ব্যবধান আরও বাড়ে। তার শটেই বল কুরাসাও ডিফেন্ডারের হাতে লাগলে পেনাল্টি পায় আর্জেন্টিনা। এরপর আর্জেন্টিনার সেভেন স্টার হওয়ার গোলটি করে মনটিল। দিবালার পাস থেকে ম্যাচের ৮৭তম মিনিটে তার গোলে আর্জেন্টিনা পায় ৭-০ গোলের বড় জয়।