দিনটি শুধুই বোলারদের

সকালের সেশনে ২০ ওভারের মধ্যে বাংলাদেশের ৪৫ রানে ৫ উইকেট নেই দেখে প্রশ্নটা করলেন নাজমুল আবেদিন ফাহিম। বিসিবি পরিচালক ফাহিম সকালে প্রেসবক্সে এসেছিলেন সাংবাদিকদের ভালোমন্দের খোঁজ নিতে। এসে দেখলেন মাঠে দল বেগতিক! শুরুর সেই সঙ্কট আর বাংলাদেশ কাটিয়ে উঠতে পারেনি। লাঞ্চে যায় ৬০ রানে ৬ উইকেটের বেহাল অবস্থায়। লাঞ্চের পরপরই বাকি ৪ উইকেটও হারায়। গুটিয়ে যায় দলের প্রথম ইনিংস ১০৬ রানে। দক্ষিণ আফ্রিকা দিন শেষে সেই স্কোর টপকে গেলেও হারিয়েছে ৬ উইকেট। আলোর স্বল্পতার জন্য দিনের নির্ধারিত খেলার ৮ ওভার আগেই খেলা শেষ করতে বাধ্য হন আম্পায়াররা। দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোরবোর্ডে তখন জমা ৬ উইকেটে ১৪০ রান। ৩৪ রানে এগিয়ে রয়েছে দক্ষিণ অতিথি দল। হাতে জমা আর মাত্র ৪ উইকেট। এক দিনে পতন হলো ১৬ উইকেটের। এই হিসেবই জানাচ্ছে মিরপুরের প্রথমদিন কেবল বোলারদের। যে উইকেটে টেস্টের প্রথমদিনেই এমন অবস্থা, তাতে একটা বিষয় পরিস্কার এই টেস্ট পঞ্চমদিনে গড়াচ্ছে না; তার অনেক আগেই শেষ হবে খেলা! মিরপুরে টেস্ট ম্যাচের প্রথমদিন ১৬ উইকেট পতনের এই ঘটনা ২০০৮ সালের পুরানো নজিরকে ছুঁয়ে ফেলল। সেই দফায় বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ছিল শ্রীলঙ্কা। সকালের সেশনে বাংলাদেশের শুরুর ৬ উইকেটের মধ্যে পাঁচটিই তুলে নেন দক্ষিণ আফ্রিকার দুই পেসার। অথচ বাংলাদেশ এই টেস্ট ম্যাচ খেলতে নেমেছে মাত্র একজন পেসার হাসান মাহমুদকে নিয়ে। মাত্র চারজন বোলার নিয়ে টেস্ট ম্যাচের এই একাদশ সাজানো ঠিক হলো? সামনের সময়ের জন্য এই প্রশ্নের উত্তরগুলো জমা রইলো। মিরপুরের উইকেট কেমন হবে? এই উত্তর খোঁজার জন্য বড় ক্রিকেট বিজ্ঞানী হওয়ার প্রয়োজন নেই। এই টেস্টেও মিরপুরের উইকেট যথারীতি মিরপুরের মতোই রইলো। লো বাউন্স, এক হাত টার্ন, স্পিনারদের দাপট-সবই রইলো দিনভর। ব্যাটাররা অসহায়ত্ব দেখালেন। বোলাররা পেশি ফোলালেন। তবে উইকেট যেমনই হোক যে কোনো টেস্ট ম্যাচের শুরুর ঘন্টা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। সেই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে সবচেয়ে বাজে ব্যাটিংয়ের নজির দেখালো বাংলাদেশ। স্পিন সহায়ক উইকেটে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের ডানা কাটা গেল দক্ষিণ আফ্রিকার পেস ঝড়ে। দ্বিতীয় সেশনে স্পিনার কেশব মহারাজ তার ‘খেল’ দেখালেন। ৩৪ রানে তার শিকার ৩ উইকেট। দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিংয়ের শুরুটাও ভালোকিছু হয়নি। ইনিংসের প্রথম ওভারেই এডউইন মার্করাম বোল্ড হন। হাসান মাহমুদের ব্যাক লেন্থে পড়া বলের সুইং এবং গতির হিসেব মেলাতে ব্যর্থ মার্করাম দেখলেন তার স্ট্যাম্প উড়ে গেছে। বাংলাদেশের বোলিংয়ের বাকি সময়ের রাজত্ব কেবল স্পিনার তাইজুল ইসলামের। ৪৯ রান খরচায় ৫ উইকেট পান তিনি। এই ম্যাচেই টেস্টে নিজের ২০০ উইকেট শিকারের মাইলস্টোনে পৌছান তাইজুল। সংক্ষিপ্ত স্কোর: বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস : ১০৬/১০ (৪০.১ ওভারে, মাহমুদুল হাসান জয় ১৫*, সাদমান ০, মুমিনুল ৪, নাজমুল ৭, মুশফিক ১১, লিটন ১, মেহেদি ১৩, নাইম ৮, তাইজুল ১৬, হাসান মাহমুদ ৪, মুলদার ৩/২২, রাবাদা ৩/২৬, মহারাজ ৩/৩৪)। দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম ইনিংস: ১৪০/৬ (৪১ ওভারে, ডি জর্জি ৩০, স্ট্যাব ১১, রিকেলটন ২৭, ভ্যারেইনে ১৮*, মুলদার ১৭*, তাইজুল ৫/৪৯)