১ লাশসহ ৭২ জেলেকে ফেরত দিল মিয়ানমার নৌবাহিনী

কায়সার হামিদ মানিক,বঙ্গোপসাগরের সেন্টমার্টিন দ্বীপের অদূরে মাছ ধরতে যাওয়া বাংলাদেশি ফিশিং ট্রলার লক্ষ্য করে মিয়ানমার নৌবাহিনীর সদস্যদের ছোড়া গুলিতে এক জেলে নিহত হয়েছিলেন। আহত হয়েছিলেন আরও দুজন। এ সময় ৭২ মাঝি-মাল্লাসহ ছয়টি ফিশিং ট্রলার ধরে মিয়ানমারে নিয়ে যাওয়া হয়। ২৪ ঘণ্টা পর নিহতের লাশসহ মাঝি-মাল্লাদের ফেরত দিয়েছে মিয়ানমার নৌবাহিনী।
বৃহস্পতিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর আড়াইটায় একটি ট্রলারে করে নিহত জেলেকে নিয়ে শাহপরীর দ্বীপ জেটিতে ভিড়ে আহত ২ জেলেসহ ১১ জন। বিকাল ৪টায় অপর পাঁচটি ট্রলারে করে সেন্টমার্টিন ঘাটে পৌঁছেন বাকি মাঝি-মাল্লারা।
টেকনাফে দায়িত্বরত নৌপুলিশের উপপরিদর্শক আবুল কাসেম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ফিরে আসা একটি ট্রলারের মালিক মতিউর রহমান বলেন, প্রথমে নিহত জেলেসহ সাইফুলের মালিকানাধীন ট্রলারটি শাহপরীর দ্বীপ জেটি আসে দুপুর আড়াইটায়। বিকাল ৪টায় অপর পাঁচটি ট্রলারসহ জেলেরা সেন্টমার্টিন ঘাটে এসেছে। সেখানে জেলেদের সঙ্গে কথা বলে কোস্ট গার্ড ও নৌবাহিনী তথ্য সংগ্রহ করছে।
ওই ট্রলারের মালিক সাইফুল বলেন, নিহতের মরদেহ দাফন এবং আহতদের চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত আছেন তিনি।
এর আগে বুধবার দুপুরের দিকে বঙ্গোপসাগরের সেন্টমার্টিন দ্বীপের অদূরে মাছ ধরতে যাওয়া বাংলাদেশি ফিশিং ট্রলার লক্ষ করে মিয়ানমার নৌবাহিনীর সদস্যরা গুলি ছুড়ে বলে জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার শাহপরীর দ্বীপ ঘাটে ফেরা সাইফুলের ট্রলারের মাঝি নুর হামিদ বলেন, গত ৬ অক্টোবর ১২ জন মিলে ট্রলারে করে সাগরে মাছ ধরতে যান। বুধবার সেন্টমার্টিন দ্বীপের দক্ষিণ পশ্চিম মৌলভী শিল এলাকা বঙ্গোপসাগরে ১০/১২টি ট্রলার কাছাকাছি থেকে মাছ ধরছিল। দুপুরের দিকে মিয়ানমারের নৌবাহিনীর সদস্যরা একটি স্পিড বোটে করে এসে তাদের ধাওয়া দিয়ে গুলি করে। এতে এক জেলে নিহত হন। নিহত মো. ওসমান শাহপরীর দ্বীপের কোনারপাড়ার বাচু মিয়ার ছেলে। আহত হন আরও দুজন। এ সময় ছয়টি ট্রলার আটক করে মিয়ানমারের দিকে নিয়ে যায় নৌবাহিনীর সদস্যরা। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
ধরে নিয়ে যাওয়া অপর পাঁচটি ট্রলারের মালিকরা হলেন- শাহপরীর দ্বীপের মিস্ত্রিপাড়ার মতিউর রহমান, আবদুল্লাহ, তার ভাই আতাউল্লাহ, উত্তরপাড়ার মো. আছেম।
টেকনাফে দায়িত্বরত নৌপুলিশের উপপরিদর্শক আবুল কাসেম বলেন, নিহত জেলের মরদেহ কোস্ট গার্ড হস্তান্তর করেছে। মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কোস্ট গার্ডের শাহপরীর দ্বীপের দায়িত্বরত এক কর্মকর্তা বলেন, মিয়ানমারের নৌবাহিনীর সঙ্গে আলোচনার পর ছয়টি ট্রলার ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। জেলেরা ঘাটে ফিরেছে। এ ব্যাপারে বিস্তারিত পরে জানানো হবে।