শরণখোলায় সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিধান চন্দ্র রায় এর বিরুদ্ধে দূর্ণীতি ও অনিয়মের অভিযোগ

শরণখোলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধিঃ বাগেরহাটের শরণখোলায় উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিধান চন্দ্র রায় এর বিরুদ্ধে শিক্ষক ডায়েরী, ক্যাসমেন্ট এরিয়ার ম্যাপ ও উপকরণ বিতরণের নামে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্ণীতির অভিযোগ উঠেছে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠাণ প্রধান ও সহকারী শিক্ষকগণ এ অভিযোগ করেন। আর এ দূর্নীতির মাধ্যমে প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে। তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায় শরণখোলা উপজেলায় প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ের সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা বিধান চন্দ্র রায় দীর্ঘদিন ধরে তার অফিসের কর্মচারী ও শিক্ষক নেতাদের সহযোগীতায় উপজেলার ১১৪ টি স্কুলে শিক্ষক ডায়েরী, ক্যাচমেন্ট এরিয়ার ম্যাপ ও উপকরণ বিক্রির নামে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন এমন তথ্য চিত্র পাওয়া গেছে। খেঁাজ নিয়ে জানা যায় শিক্ষকদের ডায়েরীর মূল্য ৩শত৫০ টাকা হলেও তিনি চাপ প্রয়োগ করে সে ডায়েরীর মূল্য ৭শত ৫০ টাকা নিয়েছেন। এছাড়া উপজেলার ১১৪ টি স্কুলে ক্যাচমেন্ট এরিয়ার ম্যাপ ডিজিটাল আকারে তৈরি করে তা ১৫শত টাকা করে বিক্রি করেছেন। শিক্ষকদের ধারনা এ ম্যাপের মূল্য ৪শত থেকে ৫শত টাকা পর্যন্ত হতে পারে। এছাড়া ১১৪ টি স্কুলে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করার লক্ষে চট্টগ্রামে কর্মরত মোঃ শহিদুল ইসলাম নামে একজন শিক্ষকের সাথে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা উপকরণ তৈরি করার চুক্তি করেন। যার সহযোগীতায় উপজেলার বিভিন্ন স্কুলের দু-একজন প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক রয়েছেন বলে জানা গেছে। যে সকল উপকরণ সমূহ বিভিন্ন স্কুলে সরবরাহ করা হয়েছে তার মূল্য নির্ধারণ করেছেন সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা বিধান চন্দ্র রায়। পুরানো স্কুলের জন্য ৭ হাজার টাকা এবং নতুন স্কুলের জন্য ৮ হাজার ৫শত টাকা। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা জানান যে উপকরণ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দেয়া হয়েছে তার আনুমানিক মূল্য অতিরিক্ত ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা হতে পারে। শিক্ষক ডায়েরী ক্যাসন্টে এরিয়ার ম্যাপ ও উপকরণ বিক্রি করে অন্যায় ভাবে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা বিধান চন্দ্র রায় ১৫ লক্ষাধিক টাকার উপরে অর্থ অনৈতিক ভাবে আদায় করে নিয়েছেন বলে বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষকরা অভিযোগ করেন। আর এতে কিছু দালাল শিক্ষক ও শিক্ষক নেতা সহযোগীতা করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। নাম পকাশ না করার শর্তে একাধিক প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক জানায় বিধান চন্দ্র রায় বিভিন্ন স্কুল পরিদর্শণে গেলে ৫ শত টাকার নিচে সম্মানি গ্রহণ করেন না। এছাড়া তিনি শিক্ষকদের উপরে চাপ প্রয়োগ করে এ সকল সামগ্রী বিক্রি করায় শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলামের সাথে যোগসাজশে এ অপকর্মগুলি করছেন বলে অনেকে মন্তব্য করেন। তিনি খুলনায় ৫তলা বাড়ি নির্মান করছেন বলে শিক্ষকরা অভিযোগ করেন। এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা বিধান চন্দ্র রায় তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগগুলি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, শিক্ষকদের সম্মতিতে উপকরণ ও ক্যাসমেন্ট এরিয়ার ম্যাপ দেয়া হয়েছে। তবে যে অভিযোগগুলি আনা হয়েছে তা তাকে ফাসানোর জন্য একটি মহলের ষড়যন্ত্র । এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম বলেন, শিক্ষা উপকরণ প্রতিটি স্কুলে নেয়ার বিধান থাকলেও শিক্ষক নেতারা এগুলি দেখাশুনা করেন। অতিরিক্ত টাকা কিভাবে আদায় করেছেন জানা নেই। তবে খোঁজখবর নেয়া হবে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্ত সুদিপ্ত কুমার সিংহ বলেন, তিনি বিষয়টি জানেন না তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত স্বাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন।