দেহব্যবসায়ী সন্দেহে গ্রাম্য শালিসে জরিমানা, ভুক্তভোগীর আদালতে মামলা

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীর বাঘায় দেহব্যবসায়ী সন্দেহে জোরপূর্বক গ্রাম্য শালিসে জরিমানা আদায় করার অভিযোগ উঠেছে। রবিবার (২৮ জুলাই) আনুমানিক রাত ১১টার সময় উপজেলার আড়পাড়া (নতুন পাড়া) গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, রবিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে আড়পাড়া (নতুনপাড়া) গ্রামের মৃত ছইর উদ্দিনের ছেলে আজিম উদ্দিনের বাড়িতে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে সাথী আক্তার নামের এক নারী কে সাথে নিয়ে আসে বাঘা বাসস্ট্যান্ড এলাকার লালন। তারা তিনজন মিলে ওই রাতে আজিমের বাড়ির উত্তর পার্শ্বের মাঠে যায় বেড়াতে। চলাচল সন্দেহজনক হওয়ায় স্থানীয় যুবকরা তাদের নাজরদারীতে রাখে। তারা চলে যাওয়ার সময় নতুনপাড়া জামে মসজিদের সামনে পথ রোধ করে পুনরায় আজিমের বাড়িতে নিয়ে যায় ওই যুবকরা। এর পর সেখানেই তাদের অবরুদ্ধ করে রেখে জরিমানা আদায় করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা জিল্লুর রহমান, সমাজ প্রধান কেতাব উদ্দিন ও তার ছোট ছেলে ফরহাদ উদ্দিন সহ সমাজের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ এবং স্থানীয় জনগন। শালিসে আজিম উদ্দিনের ১ লক্ষ টাকা ও লালনের ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় বলে জানান স্থানীয়রা। আজিম উদ্দিন জানান, আমি একজন ভ্যান চালক। বাইরে চলাচলের সুত্রধরে অনেক আগে থেকেই লালনের সাথে আমার পরিচয়। রবিবার রাতে এক মেয়েকে সাথে নিয়ে আমার বাড়িতে বেড়াতে আসে লালন। আবহাওয়া গরম তাই আমার বাড়িতে নাস্তা করার পর তাদের নিয়ে আমি বাড়ির উত্তর পার্শ্বের মাঠে যায়। মাঠ থেকে এসে তাদের বিদায় দিই। রাস্তায় স্থানীয় কয়েকজন যুবক পথ রোধ করে তাদের আমার বাড়িতে নিয় আসলে হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। তখন সমাজের প্রামানিকেরা আমার ১লক্ষ টাকা ও লালনের ২০ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য  করে। আমি টাকা দিতে না চাইলে জোর পূর্বক আমার কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা নিয়েছে। আমাকে সড়যন্ত্রকরে ফাঁসানো হয়েছে।  এ বিষয়ে আজিমের স্ত্রী অভিযোগ করে বলেন, জরিমানার টাকা দিতে রাজি না হলে স্থানীয় হিমেল নামের এক যুবক আমার হাতের উপর বাড়ি মেরে জোরপূর্বক ২০ হাজার টাকা নেয়। এ বিষয়ে মুঠোফোনে সাথী আক্তার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, রবিবার রাতে লালন নামের এক বন্ধুর সাথে আড়পাড়া নতুনপাড়া গ্রামের আজিমের বাড়িতে বেড়াতে যায়। সেখান থেকে আসার পথে স্থানীয় বখাটেরা আমাদের পথ রোধ করে এবং আমাদের তিনজনের কাছ থেকে ৩ লক্ষ টাকা দাবি করে। টাকা দিতে রাজি না হলে তারা আমার ওড়না ধরে টানা হেচড়া সহ অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এ সময় আমার কানে থাকা স্বর্ণের দুল ও গলার চেইন সিনিয়ে নেয়। পরে আজিম ও লালনের কাছ থেকে মোট ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করে । এ বিষয়ে আমি নিজে বাদী হয়ে রাজশাহীর আদালতে মানলা দায়ের করেছি।  এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে সমাজ প্রধানের মুখোমুখি হলে তোপের মুখে পড়ে সাংবাদিক। কোন বক্তব্য না দিয়ে দেখে নেওয়া সহ মানহানীর মানলা করার হুমকি দেন তার ছেলে ফরহাদ।  এ ঘটনার বিষয়ে জনমনে উকি দিচ্ছে নানা প্রশ্ন? ওই রাতে কি অনৈতিক কোন ঘটনা ঘটেছিলো সেখানে, নাকি নাটকীয় ভাবে অর্থ আদায়ের উদ্দেশ্য ফাঁসানো হয়েছে তাদের? আদায়কৃত অর্থই বা ভোগ করবে কে? তা নিয়ে এলাকা জুড়ে চলছে আলোচনা, সমালোচনা, পর্যালোচনা ও চুলচেরা বিশ্লেষণ।