উখিয়ায় আরসার জোন ও কিলিং গ্রুপ কমান্ডারসহ গ্রেপ্তার ৩

কায়সার হামিদ মানিক,কক্সবাজার,কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অভিযান চালিয়ে বিদেশি রাইফেল ও দেশীয় অস্ত্র-গুলিসহ আরসার জোন ও কিলিং গ্রুপ কমান্ডার হাফেজ কামাল ও তার দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব-১৫।
মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৩টায় উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের বালুখালী ১১ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন মরাগাছতলা ও সন্ধ্যা ৬ টায় উখিয়ার মধুরছড়া ৪-এক্সটেনশন থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন উখিয়া উপজেলার মধুরছড়া ৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডি-৯ ব্লকের বাসিন্দা নজির আহম্মদের ছেলে হাফেজ কামাল(৩৫), একই ক্যাম্পের ডি-৩ ব্লকের মোহাম্মদ ইসলামের ছেলে আনসার উল্লাহ(২০) এবং ঘোনারপাড়া ১৮ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ৮-ব্লকের বাসিন্দা বলী আমিনের ছেলে মো. সাইফুল ইসলাম।
বুধবার (৩ জুলাই)কক্সবাজার র‌্যাব ১৫-এর কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মো. আবু সালাম চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি আরও জানান, আটক তিনজনই মিয়ানমারের সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন আরসার সক্রিয় সদস্য। তাদের মধ্যে হাফেজ কামাল সংগঠনটির ক্যাম্প ভিত্তিক জোন কমান্ডারের পাশাপাশি কিলিংগ্রুপের কমান্ডার হিসেবে নিয়োজিত ছিল।
সম্প্রতি উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে পরস্পর প্রতিদ্বন্দ্বী কয়েকটি সন্ত্রাসী সংগঠন অপতৎপরতা শুরু করেছে। এতে কয়েকটি খুনের ঘটনার পাশাপাশি ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তারে সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো পরস্পর সংঘর্ষেও লিপ্ত হয়। এর প্রেক্ষিতে র‍্যাবসহ অন্যান্য আইনশৃংখলা বাহিনীও গোয়েন্দা নজরদারিসহ তৎপরতা বৃদ্ধি করে। এরই মধ্যে মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৩টায় উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের বালুখালী ১১ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন মরাগাছতলা এলাকায় আরসা কমান্ডার হাফেজ কামালের সহযোগী মোহাম্মদ সাইফুল অবস্থান করার খবর পাওয়া যায়। পরে র‍্যাব অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে।
র‍্যাবের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, পরবর্তীতে আটক সাইফুল জিজ্ঞাসাবাদে র‍্যাবকে তথ্য দেয়- আরসার কিলিংগ্রুপ কমান্ডার হাফেজ কামাল কয়েকজন সহযোগীসহ উখিয়ার মধুরছড়া ৪-এক্সটেনশন নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থান করছে। এ তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় আরেকটি দল সেখানে অভিযান চালায়। র‍্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে ৩/৪ জন সন্দেহজনক লোক দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা চালায়। এসময় ধাওয়া দিয়ে হাফেজ কামালসহ দুইজনকে আটক করতে সক্ষম হলেও অন্যরা পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থলে তল্লাশি চালিয়ে বিদেশি একটি জি-৩ রাইফেল, দেশীয় তৈরি একটি বন্দুক ও সাতটি গুলি পাওয়া যায়।
আবু সালাম চৌধুরী দাবি করেন, গ্রেপ্তারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আরসার সন্ত্রাসী তৎপরতার সঙ্গে জড়িত থাকার তথ্য দিয়েছে। তারা ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তারে খুন ও অপহরণসহ নানা অপরাধে জড়িত।
হাফেজ কামালের বিরুদ্ধে উখিয়া থানায় ৭টি হত্যাসহ ১১টি মামলা রয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃত আরসা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে উখিয়া থানায় মামলা রুজু করা হয়েছে।