ফিলিস্তিনিদের ‘মানবঢাল’ হিসেবে ব্যবহার করছে ইসরাইল

গাজার ফিলিস্তিনিদের ‘মানবঢাল’ হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে। সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে সিএনএন জানায়, ইসরাইলি সেনারা আটক ফিলিস্তিনিদের বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ও টানেলে ঢুকতে বাধ্য করেছে। যাতে তাদের নিজেদের সেনাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা যায়। প্রতিবেদনে একজন ইসরাইলি সেনা এবং পাঁচজন ফিলিস্তিনি বন্দির সাক্ষ্য উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও তাদের নাম প্রকাশ করা হয়নি প্রতিবেদনে। এই প্রথাটি গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর মধ্যে খুবই প্রচলিত বলেই জানান ওই ইসরাইলি সেনা। তিনি আরও জানান, তার ইউনিট দুই ফিলিস্তিনিকে আটক করে এবং তাদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহারের নির্দেশ দেয়। ওই ইসরাইলি সেনার ভাষায়, ‘আমরা তাদেরকে আগে ভবনে ঢুকতে বলেছিলাম। যদি কোনো বিস্ফোরক থাকে, তাহলে সেটা ফিলিস্তিনিদের ওপর দিয়েই যাবে, আমাদের ওপর নয়’। ইসরাইলি সেনাদের কাছে এই প্রক্রিয়াটি ‘মসকুইটো (মশা) প্রোটোকল’ নামে পরিচিত। তবে এই প্রক্রিয়া গাজার উত্তরাঞ্চল, গাজা সিটি, খান ইউনিস ও রাফাতে কতটা ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে, সে বিষয়ে পরিষ্কার তথ্য পাওয়া যায়নি। ওই সেনা সদস্য জানান, বসন্তকালে একজন ইসরাইলি গোয়েন্দা কর্মকর্তা তার ইউনিটে দুই ফিলিস্তিনিকে নিয়ে আসেন। যাদের মধ্যে একজনের বয়স ১৬ বছর এবং অন্যজন ২০ বছরের। ওই গোয়েন্দা কর্মকর্তা তাদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহারের নির্দেশ দেন। তিনি তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে এ বিষয়ে আপত্তি তুললেও তাকে আন্তর্জাতিক আইন নিয়ে চিন্তা না করতে বলা হয়। এ বিষয়ে এক ফিলিস্তিনি বন্দি জানান, তিনি যখন তার পরিবারের জন্য খাদ্য সাহায্য সংগ্রহ করতে যাচ্ছিলেন, তখন ইসরাইলি বাহিনী তাকে আটক করে। তাকে ৪৭ দিন ধরে একটি সামরিক স্থাপনায় আটকে রাখা হয় এবং নিয়মিত তাকে বিভিন্ন বিপজ্জনক কাজ করতে বাধ্য করা হয়। যাতে ইসরাইলি সেনাদের ক্ষতির আশঙ্কা না থাকে। মোহাম্মদ শবির নামে ১৭ বছর বয়সি আরেক ফিলিস্তিনি যুবক জানান, তাকে খান ইউনিস থেকে তুলে নিয়ে গাজার বিভিন্ন ভবন এবং এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ বস্তু সরানোর জন্য ব্যবহার করা হয়েছে। এদিকে ইসরাইলি বাহিনী উলটো দাবি করেছে যে, হামাসই ফিলিস্তিনিদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করে। তবে তাদের এ অভিযোগ নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। যেখানে ইসরাইলি বাহিনীর বিরুদ্ধেই মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। ইসরাইলি বাহিনীর এই প্রক্রিয়া নিয়ে আন্তর্জাতিক মহল থেকে সমালোচনা উঠে আসছে এবং মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘনের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা বাড়ছে।