ইসরায়েলি বাহিনী গত এক বছরে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ৭৯ শতাংশ মসজিদ ধ্বংস করে দিয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। খবর আনাদোলু এজেন্সির।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মসজিদের পাশাপাশি তিনটি গির্জাও ধ্বংস করা হয়েছে। এছাড়া ৬০টি কবরস্থানের মধ্যে ১৯টি ইচ্ছাকৃতভাবে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের জানিয়েছে, এসব ধর্মীয় সম্পত্তি গুলোর ক্ষতির আনুমানিক আর্থিক ব্যয় ৩৫০ মিলিয়ন ডলার।
মন্ত্রণালয় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে কবর অপবিত্র করার, মৃতদেহ উত্তোলন এবং যারা মারা গেছে তাদের বিরুদ্ধে নৃশংস সহিংসতা করার জন্যও অভিযুক্ত করেছে। যেমন কবর ভেঙে মরদেহ নিয়ে যাওয়া ও মরদেহ বিকৃত করা।
মন্ত্রণালয় উল্লেখ করেছে, উপাসনালয় ধ্বংসের পাশাপাশি মন্ত্রণালয়ের অধীনে ১১টি প্রশাসনিক ও শিক্ষাগত সুবিধা ধ্বংস করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, ইসরায়েলি বাহিনী তাদের ২৩৮ জন কর্মচারীকে হত্যা করেছে এবং স্থল আক্রমণের সময় ১৯ জনকে আটক করেছে।
মন্ত্রণালয় গাজার ধর্মীয় স্থানগুলোতে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা করেছে। ইসলামিক সংস্থাগুলোসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ‘চলমান ধ্বংসের যুদ্ধ’ থামাতে অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করার আহ্বান জানিয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, গত বছরের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৪১ হাজার ৮০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এছাড়া ৯৬ হাজার ৮০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। হতাহতদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
উল্লেখ্য, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে দখলদারিত্বের প্রতিবাদে গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের দাবি, এই হামলায় প্রায় ১২০০ নিহত ও দুই শতাধিক ইসরায়েলিকে জিম্মি করে গাজায় যায় হামাস যোদ্ধারা। এর জবাবে ওই দিনই গাজায় বিমান হামলা ও পরে স্থল অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
টানা এক বছর ধরে চলা ইসরায়েলি হামলা গাজা উপত্যকার প্রায় পুরো জনগোষ্ঠীকে বাস্তুচ্যুত করেছে। হামলার পাশাপাশি গাজায় অবরোধ আরোপ করে রেখেছে ইসরায়েল। যার ফলে খাবার, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটে মুখে পড়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন ফিলিস্তিনিরা।