ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টকে বরখাস্ত করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। নেতানিয়াহুকে বিচার ব্যবস্থার পরিবর্তনের বিতর্কিত পরিকল্পনা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন তিনি। এক বিবৃতিতে বলা হয়, নেতানিয়াহু রোববার সন্ধ্যায় প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাজারো বিক্ষোভকারী ইসরায়েলি পতাকা হাতে তেল আবিব ও জেরুজালেমের রাস্তায় নেমে পড়েন। জেরুজালেমে নেতানিয়াহুর বাসভবনের বাইরে আন্দোলনকারীরা জড়ো হয়েছেন। টানা ১২ সপ্তাহ ধরে নেতানিয়াহুর নতুন সরকারের বিচার বিভাগীয় সংস্কার পরিকল্পনার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেন তারা। এই পরিস্থিতিতে নেতানিয়াহুকে বিচার ব্যবস্থার পরিবর্তনের বিতর্কিত পরিকল্পনা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট। বিতর্কিত ওই পরিবর্তন নিয়ে সরব হয়ে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন, এই সংকট সামাজিক বিপর্যয়ের কারণ হচ্ছে এবং সেটি ইসরায়েলের নিরাপত্তার ক্ষতি করতে পারে। ইসরায়েলে বিচার ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তনের জন্য সরকারি পরিকল্পনার বিরুদ্ধে গত ১২ সপ্তাহ ধরে ভূখণ্ডটিতে এই বিক্ষোভ চলছে। বিক্ষোভকারীরা সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা কমানোর জন্য কট্টর ডানপন্থি নেতানিয়াহু সরকারের পরিকল্পনার বিরোধিতা করছেন। সমালোচকরা বলছেন, ইসরায়েলি সরকারের এই পরিকল্পনা বিচারিক স্বাধীনতার জন্য হুমকি। নেতানিয়াহু সরকারের বিচার বিভাগীয় সংস্কার পরিকল্পনার সমালোচকরা বলছেন, এই সংস্কার পরিকল্পনা ইসরায়েলের গণতন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। তবে নেতানিয়াহুর সরকার বলছে, তাদের পরিকল্পিত এই পরিবর্তনই ভোটারদের জন্য ভালো ফল বয়ে আনবে। সংবাদমাধ্যম বলছে, ইসরায়েলের বিচার ব্যবস্থাকে সংশোধন এবং সুপ্রিম কোর্টকে দুর্বল করার একটি পরিকল্পনা সম্প্রতি উন্মোচন করেছে ইসরায়েলের নতুন সরকার। এসব সংস্কার বাস্তবায়ন হলে ইসরায়েলের পার্লামেন্টের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের রায়গুলোকে বাতিল করা সহজ হবে। তবে সমালোচকরা বলছেন, নেতানিয়াহু সরকারের এই সংস্কার পরিকল্পনা ইসরায়েলের বিচারিক স্বাধীনতাকে পঙ্গু করবে, দুর্নীতিকে আরও উৎসাহিত করবে, সংখ্যালঘুদের অধিকার নষ্ট করবে এবং ইসরায়েলের আদালত ব্যবস্থাকে বিশ্বাসযোগ্যতা থেকে বঞ্চিত করবে। মূলত ওই আইন পাস হলে আইনসভা এবং নির্বাহী বিভাগের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা সীমিত হয়ে যাবে। একইসঙ্গে বিচারক নিয়োগের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্তমূলক ক্ষমতা পাবেন পার্লামেন্টের আইন প্রণেতারা।