কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) সদস্যদের সঙ্গে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান রোহিঙ্গা সলভেশন আর্মি (আরসা) সন্ত্রাসীদের গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে একাধিক হত্যা মামলার আসামি এক আরসা নেতা (কমান্ডার) নিহত হয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) সকাল হলে দুপুর পর্যন্ত ক্যাম্প-১৯ এর ব্লক এ-৮ ঘোনারপাড়া এলাকায় থেমে থেমে এ গোলাগুলির ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন ক্যাম্পে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ৮ এপিবিএনর সহকারী পুলিশ সুপার (অপস অ্যান্ড মিডিয়া) মো. ফারুক আহমেদ।
নিহত আব্দুল মজিদ ওরফে লালাইয়া (৩৪) উখিয়ার ক্যাম্প-১৩, ব্লক-ই/৩ এর তাজনিমার খোলা এলাকার নুরুল আমিনের ছেলে। তার লাশ পাশ থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র ও দুই রাউন্ড গুলি উদ্ধার হয়ে। নিহত আব্দুল মজিদ লালাইয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সংঘটিত ৪টি হত্যা মামলার এজাহার ভুক্ত আসামি ও আরসা নেতা (কমান্ডার) হিসেবে পরিচিত।
এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা হলেন কক্সবাজারে উখিয়ার ক্যাম্প-১৯ এর ব্লক- এ/৮’র বাসিন্দা কাশেম আলীর ছেলে মোহাম্মদ তাহের (৪৫), একই ক্যাম্পের ব্লক- এ/১৭’র বাসিন্দা মৃত সৈয়দ হোসেনের ছেলে জামাল হোসেন (২০) ও ব্লক-এ/৮’র বাসিন্দা সলিমুল্লাহর ছেলে লিয়াকত আলী (২৫)।
৮-এপিবিএনর সহকারী পুলিশ সুপার (অপস অ্যান্ড মিডিয়া) মো. ফারুক আহমেদ জানান, ক্যাম্প-১৯ এর তাজনিমারখোলার ঘোনারপাড়ায় ক্যাম্প-১৯ এর ব্লক এ-৮ এর আমিন মাঝির বাড়ির পাশে কয়েকটি ঘরে সন্ত্রাসীরা অবস্থান করার খবর পেয়ে পুলিশের ২০-২৫ জনের একটি দল সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এলাকাটি ঘিরে ফেলে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ১০টার দিকে ঘোনারপাড়ার জনৈক হামিদা বেগমের (৩১) ঘর এবং আশেপাশের গলি ও পাহাড় হতে ৪০-৫০ জন সন্ত্রাসী অস্ত্রধারী পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি করতে থাকে। পুলিশও আত্নরক্ষার্থে সন্ত্রাসীদের লক্ষ্য করে পাল্টা গুলি চালায়। প্রায় আধাঘন্টা গোলাগুলির পর সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন দিকে পালিয়ে যায়। পুলিশ উক্ত এলাকা ও ঘর তল্লাশিকালে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করে। পাশের রুমে আরসা কমান্ডার আব্দুল মজিদ ওরফে লালাইয়ার লাশ গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখে। লাশের বাম হাতের পাশে একটি আগ্নেয়াস্ত্র ও দুই রাউন্ড গুলি পাওয়া যায়।
তিনি আরও জানান, ঘটনার সময় দুজন পুলিশ সদস্য আহত হন। নিহত আরসা নেতা (কমান্ডার) আব্দুল মজিদ ওরফে লালাইয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সংঘটিত ৪টি হত্যা মামলার আসামি।
খবর পেয়ে ৮-এপিবিএন অধিনায়ক মো. আমির জাফরসহ বিভিন্ন পদের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে লাশের সুরতহাল করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ঘটনাস্থলে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলে উল্লেখ করেন পুলিশের ওই কর্মকর্তা।