নারায়ণগঞ্জে শেখ হাসিনা-কাদের-শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

বৈষমবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নারায়ণগঞ্জের চাষারা এলাকায় আবুল হাসান (২০) নামের এক তরুণকে হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানসহ ৪৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

শনিবার (১৭ আগস্ট) রাতে আবুল হাসানের ভাই আবুল বাশার অনিক বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় এই হত্যা মামলা দায়ের করেন।

নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুস সাত্তার মামলা হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘গত ৫ আগস্ট সংঘর্ষে আবুল হাসান স্বজন নামে একজন নিহত হওয়ার ঘটনায় তার ভাই বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় ৪৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১৫০ থেকে ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।‘

নিহত আবুল হাসান কোমল পানীয় প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানে বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে চাকরি করতেন। তিনি বন্দর উপজেলার কুশিয়ারা এলাকার জাকির হোসেনের ছেলে।

মামলার অপর আসামিরা হলেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসান মাহমুদ, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ, সাবেক জাতীয় পার্টির দলীয় সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান, তাঁর ভাতিজা আজমেরী ওসমান, অয়ন ওসমান, শামীম ওসমানের শ্যালক তানভীর আহমেদ, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল করিমসহ এজাহারনামীয় ৪৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও দেড় থেকে দুই শতাধিক ব্যক্তিকে আসামি করে মামলাটি করা হয়।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল এবং সাবেক তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক পরস্পর পরামর্শ করে সারাদেশের আওয়ামী লীগের কর্মীদের দেশের প্রতিটি এলাকায় ছাত্র-জনতার যৌক্তিক আন্দোলন প্রতিহত ও নির্মূলের নির্দেশ দেন।

‘এরই প্রেক্ষিতে ৫ আগস্ট বেলা দেড়টার দিকে শহরের মিশনপাড়া এলাকায় আবুল হাসানকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অপরাপর আসামির নির্দেশে শামীম ওসমানের ছেলে অয়ন ওসমান গুলি করে হত্যা করেন।‘

৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা আগে শহরের মিশনপাড়া এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন আবুল হাসান। সে সময় চাষাঢ়া এলাকায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের সংঘর্ষ চলছিল। গুলিবিদ্ধ আবুল হাসানকে উদ্ধার করে  ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন ভোরে তিনি মারা যান।