রাজধানীর পল্টনে কামাল মিয়া নামে এক রিকশাচালককে হত্যা সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু; সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের নির্দেশেই হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রশিদুল আলমের আদালতে শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষ এ দাবি করে।
এর আগে, এদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পল্টন মডেল থানার সাব-ইন্সপেক্টর মো. ইউসুফ প্রত্যেকের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়েছে, আসামিরা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংগঠনের নেতা। ঢাকাসহ সারা দেশের কোটাবিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরা রাস্তায় অবস্থান করলে, তাদের নির্দেশ ও হুকুমে আন্দোলনকারী ছাত্র-ছাত্রীদের রাস্তা থেকে সরানোর জন্য প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতিকারীরা আগ্নেয়াস্ত্রের মাধ্যমে এলোপাথাড়ি গুলি করে। এতে ভিকটিম কামাল মিয়া গুরুতর আহত হন। পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। আসামিদের পুলিশ হেফাজতে নিয়ে এসে ব্যাপকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা সম্ভব হলে মামলার ঘটনা সংক্রান্তে সুস্পষ্ট তথ্য সংগ্রহ, ঘটনায় ব্যবহৃত আলামত উদ্ধার ও মূল রহস্য উদঘাটন সম্ভব হবে। এজন্য আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে ১০ দিনের পুলিশ রিমান্ডে আনা একান্ত প্রয়োজন।
রাষ্ট্রপক্ষ ১০ দিনের রিমান্ডই মঞ্জুরের প্রার্থনা করেন। রাষ্ট্রপক্ষে পুলিশ ইন্সপেক্টর মো. আসাদুজ্জামান বলেন, এই আসামিদের নির্দেশেই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। তাদের ১০ দিনেরই রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করেন তিনি।
আসামিদের পক্ষে তাদের আইনজীবী আতাউর রহমান রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন।
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেকের ১০ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
এর আগে, বেলা ৩টার দিকে তাদের আদালতে হাজির করা হয়। শুনানিকালে তাদের এজলাসের পেছনে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। এতে আপত্তি তোলেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা। আসামিদের খাঁচায় রাখার জন্য হই-হুল্লোড় করতে থাকেন আইনজীবীরা। এরই মাঝে শুনানি শুরু হয়। শুনানি শেষে আদালত তাদের প্রত্যেকের ১০ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
এদিন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা বলতে থাকেন, পলক কই, পলক কই। ওর ফাঁসি চাই। অন্যান্য আসামিদেরও ফাঁসির দাবি জানান তারা।
এর আগে, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরদিন ৬ আগস্ট হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জুনাইদ আহমেদ পলককে আটক করা হয়েছিল বলে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) একটি সূত্র জানিয়েছিল। একই দিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতকেও বিমানবন্দর থেকে আটকে দেওয়া হয়।